আজ, বুধবার থেকে ছুটি পড়ে গেল রাজ্য সরকারি, সরকার–পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সব স্কুলে। গরমের ছুটি পড়ে গেল। কিন্তু এই গরমের ছুটি শেষ কবে? স্কুল আবার কবে খুলবে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান পড়ুয়ারা এবং অভিভাবকা। কিন্তু তা নিয়ে কোনও নির্দেশিকা এখনও জারি করেনি শিক্ষা দফতর। তার জেরে শিক্ষকরাও এখন অন্ধকারে। আগামী বছর (২০২৬) যারা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে তারাও চিন্তিত। কারণ উচ্চমাধ্যমিকের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে তৃতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টারে। তৃতীয় সিমেস্টার সেপ্টেম্বর মাসে হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে স্কুল খোলার দিনক্ষণ জানা খুব প্রয়োজন।
সরকারি স্কুলের যে ক্যালেন্ডার তৈরি হয়েছিল সেটা অনুযায়ী, গরমের ছুটি ১২ মে থেকে শুরু হবে। স্কুল খুলবে ২৩ মে। কিন্তু ৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে ঘোষণা করেন, গরমের ছুটি পড়বে ৩০ এপ্রিল থেকে। কারণ প্রচণ্ড গরম পড়েছে রাজ্যজুড়ে। আর মুখ্যমন্ত্রীর ছুটি ঘোষণার পরদিনই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দেন, আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি দেখে তবেই স্কুল কবে খুলবে জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও জানানো হয়নি, গরমের ছুটির পরে স্কুল খুলবে কবে! এখন আবার বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে আগের গরম এখন নেই।
আরও পড়ুন: ‘বিশ্বজগতের প্রভুর আশীর্বাদ প্রার্থনা করার সৌভাগ্য হল’, অনুভূতি জানালেন মমতা
এই আবহে স্কুল খোলার তারিখটা সকলেই জানতে উদগ্রীব। শিক্ষামন্ত্রী কি এখনও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা বুঝতে পারেননি? প্রশ্ন অনেকের। এই বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘পড়ুয়ারা জিজ্ঞাসা করছে, স্কুল কবে খুলবে? আমাদের কাছে কোনও উত্তর নেই। এভাবে চললে ভয়ানক সমস্যা দেখা দেবে। একেই স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। তার উপরে ছুটির নির্দিষ্ট তারিখ না থাকলে শিক্ষকরা পাঠ্যক্রম শেষ করাতে পারবেন না। সরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা বেসরকারি স্কুলে চলে যাবে।’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শিক্ষকদের চাকরি চলে গিয়েছে। তবে পরে রাজ্য সরকার আবেদন করলে যোগ্যরা যেতে পারবেন স্কুলে বলে জানানো হয়। সেক্ষেত্রে অযোগ্যদের স্কুলে আসতে বারণ করে দেওয়া হয়। তার উপর আজ থেকে গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছে। শিক্ষকরা জানান, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে চিন্তা বেশি। কারণ তাদের হাতে এখনও পৌঁছয়নি বাংলা পাঠ্যবই। একাদশ, দ্বাদশের বাংলা এবং ইংরেজি বই দেয় শিক্ষা দফতর। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নিজস্ব ওয়েবসাইটে বাংলা পাঠ্যবই আপলোড করেছে। সেখান থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট নিয়ে পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন শিক্ষকরা। আর চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের কথায়, ‘গরমের ছুটিতে উচ্চমাধ্যমিকের তৃতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাস করতে বলা হয়েছে। বাংলা বই ছাপার কাজ চলছে। প্রয়োজন পড়লে গরমের ছুটির মধ্যেই পড়ুয়াদের স্কুলে ডেকে বই দেওয়া হবে।’