আজ অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে দ্বারোদ্ঘাটন হল দিঘার জগন্নাথ মন্দির। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন। সঙ্গে আছেন সাংসদ দেব থেকে শুরু করে রাজ্যের মন্ত্রীরা। আজ বুধবার সকাল থেকেও শুরু হয় যজ্ঞ। বন্ধ দরজার ভিতরে জগন্নাথের বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অন্যতম প্রধান সেবায়েত রাজেশ দ্বৈতাপতির নেতৃত্বে পুরোহিতরা এই কাজ করেন। সঙ্গে আছেন ইসকনের কর্মকর্তা তথা দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য় রাধারমণ দাস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে প্রবেশ করার পর নিজের মনের অনুভূতি তুলে ধরলেন এক্স হ্যান্ডেলে।
শুভক্ষণে মন্দিরের দ্বার উন্মোচন করে দরজা ঠেলে ঢুকলেন মন্দিরের ভিতরে মুখ্যমন্ত্রী। ভিতরে দেখা গেল জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ। বিগ্রহের সামনে আরতিও করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অক্ষয় তৃতীয়ার মাহেন্দ্রক্ষণে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন হল। দ্বারোদ্ঘাটন করলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এবার মন্দিরের দরজা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত শিল্পী, পুরোহিতবৃন্দ, সন্ন্যাসী, তারকা এবং স্থানীয় মানুষজনকে ধন্যবাদ জানান। আজ আরতি করার পর এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘চিরকাল লালিত থাকার মতো একটি মুহূর্ত। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে অবস্থিত প্রভু জগন্নাথের প্রথম আভাস আমার হৃদয়ে গেঁথে থাকবে।’
আরও পড়ুন: ‘বাড়ি বসেই প্রসাদ পাবে রাজ্যবাসী’, দ্বার উন্মোচন করে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী
এদিন নিয়ম মেনে প্রথমে নিমকাঠের তৈরি জগন্নাথ মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পন্ন করা হয়েছে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ জগন্নাথের পাথরের বিগ্রহে প্রাণপ্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করা হয়। একই সঙ্গে রাধাকৃষ্ণের পাথরের মূর্তিতেও প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। রীতি অনুযায়ী প্রথমে ভগবানকে সোনা, রুপো ও তামার তার দিয়ে বেঁধে সেই তারকে প্রধান পুরোহিতের কোমড়ে বাঁধা হয়। এরপর ঘট স্থাপন, কুণ্ড ও অবশেষে প্রতিবিম্ব তৈরি করা হয়। রাধারমণ দাস জানিয়েছেন, পুরীর নিয়ম মেনেই প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর জগন্নাথের স্নান এবং বস্ত্র পরিধানের প্রক্রিয়া সারা হয়। জগন্নাথের উদ্দেশে নিবেদন করা হয় ৫৬ রকমের ভোগ।
দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দিরে ঢোকার আগে দিলেন সম্প্রীতির বার্তা। তিনি জানালেন, বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে জগন্নাথদেবের প্রসাদ ও ছবি। তবে সেটা আগামীদিনে। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরকে এই দায়িত্ব দেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি মনে করি, এই মন্দির আগামী হাজার হাজার বছর ধরে তীর্থস্থান এবং পর্যটনস্থল হিসাবে উন্মাদনার প্লাবন তৈরি করবে। এই মন্দির সকলের জন্য। তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, সবারে করি আহ্বান। আগামীদিন সবার বাড়িতে ছবি ও প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’ এরপর মন্দিরে পুজো দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখলেন, ‘পবিত্র মূর্তি থেকে নির্গত ঐশ্বরিক তেজে আমার আত্মায় আলোড়ন অনুভব করেছি। আমার আরতি করার এবং আমাদের মা, মাটি, মানুষের উপর বিশ্বজগতের প্রভুর আশীর্বাদ প্রার্থনা করার সৌভাগ্য হল।’