কেন্দ্রীয় বাজেটে ‘চায়ে–পে চর্চা’ নেই। যদিও ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী নিজেকে চা–বিক্রেতা বলেছিলেন। জাতীয় রাজনীতিতে সেভাবেই জনসংযোগ করেছিলেন। সঙ্গে ছিল সেই কণ্ঠস্বর—‘মিত্রোঁ’। আর তৃতীয় এনডিএ সরকারের বাজেটে চা–শিল্পই ব্রাত্য থাকল। আর তাই চা শিল্পে জড়িতদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এবার যে বাজেট পেশ হয়েছে তাতে চা–শিল্প নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে অভিযোগ। এই বাজেটে চা–শিল্পের উন্নয়ন নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার জেরে চরম হতাশা নেমে এসেছে উত্তরবঙ্গের চা–মহল্লায়। গোটা বাজেট দেখে হতাশ ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনও।
উত্তরবঙ্গে বিজেপির পায়ের তলার মাটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। একের পর এক নির্বাচনে সেখানে পদ্মফুল ফোটার পরিবর্তে ঘাসফুল ফুটছে। তাই কি এমন বৈষম্য? উঠছে প্রশ্ন। আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে চায়ের উৎপাদন একদিকে কমেছে অপরদিকে একের পর এক নিলামে চায়ের দামে মারাত্মক হারে কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চা–শিল্প। গত দশ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার স্পেশাল পারপাস টি ফান্ড বন্ধ করে দেওয়ায় ধুঁকছে চায়ের ব্যবসা। একের পর এক চা–বাগান বন্ধ রয়েছে। তবে সেগুলি এক এক করে খুলছে রাজ্য সরকার। বাজেটে কিছু সাহায্য মিললে চা শিল্প বেঁচে যেত। কিন্তু তা হল না।
আরও পড়ুন: নিকাশি নালা পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ হারালেন তিন সাফাইকর্মী, বানতলায় আলোড়ন
সম্প্রতি সংসদের শিল্প বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চা উৎপাদনের ধরন বদলের ক্ষেত্রে গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিল। তার কোনও উল্লেখ নেই বাজেটে। এই আবহে দেশে চা উৎপাদন কমেছে ৫৪ শতাংশ। আর বঙ্গে চা উৎপাদন কমেছে ২৫ শতাংশ। চা পর্ষদ বাজারে চাহিদা এবং জোগানের ভারসাম্য ফেরাতে চা–পাতা তোলার সময় কমিয়ে উৎপাদন কমাতে চাইছে বলে অভিযোগ চা– শ্রমিকদের। চা–বাগানগুলিকে নতুন চারা রোপণ এবং পুরনো গাছ তুলে ফেলার জন্য হেক্টর প্রতি ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিত কেন্দ্রীয় সরকার। কারখানার আধুনিকীকরণের জন্যও বাৎসরিক অনুদান দিত। স্পেশাল পারপাস টি ফান্ড বন্ধ করার জেরে আজ দুর্দশা চা–শিল্পে।