স্টার জলসায় আসছে নতুন মেগা 'বুলেট সরোজিনী'। মঙ্গলবার হয়ে গেল ‘বুলেট সরোজিনী’ লঞ্চের অনুষ্ঠান। সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল হিন্দুস্থান টাইমস বাংলাও। এই ধারাবাহিকে দাপুটে চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজকে। মেগায় তাঁর চরিত্রের নাম ‘রাগিনী চট্টোপাধ্যায়’। 'রাগিনী' পেশায় একজন সেতার শিল্পী।
চলতি বছরের শিবরাত্রির দিন অভিনেত্রী এই চরিত্রটির জন্য অফার পান। মেগার পরিচালক তথা প্রযোজক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার নিজেই তাঁকে ফোন করে এই চরিত্রটির কথা জানান। মেগার প্রোমোতে অভিনেত্রীর লুক দেখে অনেকেই ধারণা করেছিলেন যে তাঁকে নেগেটিভ চরিত্রে দেখা যাবে। কিন্তু সেখানেই শ্রীময়ীর আপত্তি রয়েছে। তিনি জানান, লুক দেখে কেবল বিচার করলে চলবে না। কারণ একটা চরিত্রের নানা স্তর থাকে। কেউ সম্পূর্ণ খারাপ হয় না, তাঁর খারাপ হওয়ার পিছনেও একটা গল্প থাকে। তাঁর মধ্যেও অনেকগুলো ভালো দিক লুকিয়ে থাকে। 'রাগিনী' চরিত্রটা একেবারে সেই রকম।
নায়িকার কথায়, ‘আমি কি আদৌও ভিলেন? আমি নিজেই জানি না। হয়তো লুক দেখে সবাই বলছে। আসলে সবাই এখন ভীষণ জাজমেন্টাল। আমরা লোকজনকে দেখে খুব তাড়াতাড়ি তাঁর একটা ছবি বানিয়ে নিই। সে আসলে কেমন, তা জানার চেষ্টা করি না। যেমন আমারই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেক বেশি চর্চা হয়েছে, কাজের থেকেও। অনেকে আমাকে যেমনটা ভাবেন, আমি কি সত্যি তাই? তা তো নয়। সে রকম রাগিনী চট্টোপাধ্যায়েরও অনেকগুলো দিক রয়েছে। সেই দিকগুলো জানতে হলে দেখতে হবে বুলেট সরোজিনী।’
পাশাপাশি তাঁর লুক দেখে স্বামী কাঞ্চন মল্লিক যে খুব প্রশংসা করেছেন তাও জানান শ্রীময়ী। অভিনেত্রীর কথায়, ‘এই লুকটা দেখে ও ভীষণ খুশি। ও তো আমার সব লুক দেখেই আল্পুত হয়ে যায়। না হলে কি আর প্রেমে পড়ত। তবে কাঞ্চন মাঝে মাঝে একটু ভয় পেয়ে যায়, আসলে কাঞ্চন তো আমাকে প্রতিটা কাজে খলনায়িকার চরিত্রে দেখেছে। এখন তো ওঁর সঙ্গে ঘর বেঁধেছি। ওভাবে যদি এর বহিঃপ্রকাশ বা আফটার এফেক্ট বাড়িতে পড়ে তাহলে কাঞ্চন ভাববে লোটা-কম্বল নিয়ে কোথায় যাব। এটা কাঞ্চন আরও ভালো বলতে পারবে।’
তবে সদ্য কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন শ্রীময়ী। তাঁর মেয়ে কৃষভি এখন অনেকটাই ছোট। তাঁকে সামাল দিয়ে শ্যুটিং করাটা কতখানি কঠিন হচ্ছে তাঁর জন্য? প্রশ্নে শ্রীময়ী বলেন, ‘কৃষভিকে হয়তো আমি আর কাঞ্চণ জন্ম দিয়েছি, কিন্তু ওঁর মা-বাবা হচ্ছে ওঁর দাদু আর দিদা। আমার মা-বাবা যদি না থাকতেন তাহলে হয়তো আমি ফ্লোরেই দাঁড়াতে পারতাম না। কারণ আমরা যতই লোক রাখি, আয়াদের ভরসায় বাচ্চাকে ছেড়ে আসা যায় না।'
তাঁর কথায়, ‘আর কৃষভি তো এখন একটা মাটির তাল, ওকে এখন যে ভাবে তৈরি করা হবে ও সেভাবে তৈরি হবে। আমার প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগত। মনে হত আমি কাজে চলে যাচ্ছি ৬ মাস পর গেলে ভালো হতো। কিন্তু যখন কাজ এল, তখন মনে হল হাতের লক্ষ্মীকে পায়ে ঠেলতে নেই। আমি মা হয়েছি সদ্য। তাই শারীরিক অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। হরমোনের অনেক পরিবর্তন হয়। সব কিছুকে উপেক্ষা করে যখন প্রযোজনা সংস্থা ও চ্যানেল আমাকে এরকম একটা চরিত্রের জন্য ভেবেছে। আমার প্রতি সেই ভরসা আর আস্থা রেখেছে যে, আমি করতে পারব। তখন আমার মনে হয় আমার অবশ্যই করা উচিত। কারণ এটাও তো আমার ভালোবাসা। আজ হয়তো আমার সঙ্গে কাঞ্চনের আলাপ হত না, বা কৃষভিও আসতো না, আমি যদি এই পেশায় না থাকতাম। তো আমি ওয়ার্কিং মাদার হিসেবে এই জায়গাটার গুরুত্ব আগে দেব। কারণ আমার মনে হয় যে, প্রত্যেকের নিজের পায়ের দাঁড়ানো উচিত।’
মেগায় সেতার বাজানোতে তাঁকে দেখা যাবে। তাই সেতার শেখাও শুরু করেছেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রমোতে আমাকে সেতার বাজাতে দেখা গিয়েছে। সেতার বাজানো খুব কঠিন কাজ। কারণ একটা বাদ্যযন্ত্র বাজানো না শিখে সম্ভব নয়। কারণ এগুলো তো সাধনা। তাই আমি সেতার শেখা শুরুও করেছি। সেতার কতটা শিখে উঠতে পারব জানি না। কারণ সেখানে অনেকটা অধ্যাবসায়ের প্রয়োজন হয়। কাঞ্চনের এক বন্ধু তিনি থিয়েটারের শিল্পী। ওঁর কাছ থেকে আমি শিখছি।’