দিল্লি ক্যাপিটালসের (ডিসি) বিরুদ্ধে ১৪ রানের জয়ের পর কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) স্পিনার সুনীল নারিন দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। যদিও এই ম্যাচে তাঁর অলরাউন্ড পারফরমেন্স ছিল দেখার মতো। প্রথমে ব্যাট হাতে ১৬ বলে ২৭ রান করেন। এই সময়ে তিনি দুটি ছক্কা ও দুটি চার মারেন। এরপরে বল হাতে নিজের কোটর চার ওভারে ২৯ রান খরচ করে নেন তিনটি উইকেট। অক্ষর, ফ্যাফও ত্রিস্তানকে আউট করেন তিনি। এছাড়াও এদিনের ম্যাচে কেএল রাহুলকে রান আউট করেন সুনীল নারিন এবং আশুতোষ শর্মার ক্যাচও ধরেন তিনি। এই অলরাউন্ড পারফরমেন্সের পরে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন নারিন।
অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবারের ম্যাচে নারিনের জাদুকরী বোলিং স্পেল কেকেআরকে জয়ের পথে ফিরিয়ে আনে এবং দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১৪ রানে পরাজিত করতে বড় ভূমিকা পালন করে।
জয়ের জন্য দলগত প্রচেষ্টাকেই গুরুত্ব দিলেন সুনীল নারিন
ম্যাচ-পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সুনীল নারিন বলেন, ‘এটা পুরোপুরি একটা দলগত প্রচেষ্টা ছিল। আমরা মিডল ওভারে অংকৃষ (রঘুবংশী) ও রিঙ্কুর ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে শুরু করেছিলাম। আমি এখনও বিশ্বাস করি, আমি ফিরে এসে দলের জন্য পারফর্ম করতে পারি। কিছু ম্যাচে আপনি ভালোভাবে শুরু করেন এবং পরে ছন্দ হারান, আবার কিছু ম্যাচে আপনি খারাপ শুরু করেও ভালোভাবে শেষ করেন।’
কেএল রাহুলের রান আউট নিয়ে কী বললেন নারিন?
সবচেয়ে উপভোগ্য উইকেট সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে সুনীল নারিন বলেন, ‘সব উইকেটই ভালো লাগে, কোনও নির্দিষ্ট উইকেট নয়। আমি খুব একটা ভালো ফিল্ডার নই, তবে সুযোগ পেলে রান-আউট করা সবসময়ই ভালো লাগে।’ কেএল রাহুলকে রান আউট করার প্রসঙ্গে নারিন বলেন, ‘আমি শুধু বলটাকে যত জোরে পারি ছুঁড়ে মারি।’
নিজের সাফল্যের রহস্যের কথা বললেন সুনীল নারিন
এরপরে সুনীল নারিন আরও বলেন, ‘আমি সবসময় চাই অধিনায়কের কাছে এমন একটা বিকল্প থাকতে, যে চাপের মুহূর্তে বোলিং করতে পারে। যদি আপনি সেই খেলোয়াড় হতে চান, তবে এমন সময়েও পরিশ্রম করতে হবে যখন কোনও অনুশীলন থাকে না।’
আরও পড়ুন … কেমন আছেন অক্ষর প্যাটেল? KKR-এর কাছে হেরে নিজের চোট নিয়ে কথা বললেন DC ক্যাপ্টেন
কেমন ছিন ম্য়াচ-
KKR-এর ইনিংস-
ম্যাচের প্রসঙ্গে, দিল্লি টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কেকেআরের প্রথম চার ব্যাটার – রহমানউল্লাহ গুরবাজ (১২ বলে ২৬, পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা), সুনীল নারিন (১৬ বলে ২৭, দুটি চার ও দুটি ছক্কা), অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে (১৪ বলে ২৬, চারটি চার ও একটি ছক্কা) এবং অংকৃষ রঘুবংশী (৩২ বলে ৪৪, তিনটি চার ও দুটি ছক্কা) দ্রুত রান তোলেন। অংকৃষ ও রিঙ্কু সিং (২৫ বলে ৩৬, তিনটি চার ও একটি ছক্কা) মিলে ৬১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন, যার ফলে কেকেআর ২০ ওভারে ২০৪/৯ রান করে। দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে মিচেল স্টার্ক ৩/৪৩, বিপ্রজ নিগম ২/৪১ এবং অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল ২/২৭ উইকেট নেন।
আরও পড়ুন … তোমাদের দলের বেবিটা এমন শট খেলছে যেন অনেক অভিজ্ঞ… বৈভবকে নিয়ে কী বললেন ধোনি-কোহলি?
DC-র ইনিংস-
রান তাড়া করতে নেমে দিল্লি ক্যাপিটালস পাওয়ারপ্লে শেষে ৬০/৩ অবস্থায় ছিল। এরপর ফ্যাফ ডু প্লেসি (৪৫ বলে ৬২, সাতটি চার ও দুটি ছক্কা) ও অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল (২৩ বলে ৪৩, চারটি চার ও তিনটি ছক্কা) মিলে ৭৬ রানের জুটি গড়ে দলের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে দেন। কিন্তু নারিনের বলে অক্ষরের আউটের পর থেকেই ডিসির পতন শুরু হয় এবং দলটি ১৬০/৮ স্কোরে পৌঁছে যায়। শেষদিকে বিপ্রজ নিগম (১৯ বলে ৩৮, পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা) লড়াই চালালেও ডিসি ২০ ওভারে ১৯০/৯ স্কোরে থেমে যায়।
আরও পড়ুন … মাত্র ৬ বছর বয়সে ও আমার দলকে সমর্থন করত… RR-এর বৈভব সূর্যবংশীর প্রশংসায় LSG-র মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা
কেকেআরের হয়ে সেরা বোলার ছিলেন নারিন, যিনি ৪ ওভারে ৩/২৯ নেন। বরুণ চক্রবর্তী ৪ ওভারে ২/৩৯ নেন। এছাড়া অংকুল রায়, বৈভব অরোরা ও আন্দ্রে রাসেল একটি করে উইকেট দখল করেন।
পয়েন্ট টেবিলে দুই দলের ছবি-
এই জয়ের ফলে কেকেআর এখন পয়েন্ট টেবিলের সপ্তম স্থানে, ৪টি জয় ও ৫টি হারে তাদের সংগ্রহ ৮ পয়েন্ট। দিল্লি ক্যাপিটালস চতুর্থ স্থানে রয়েছে, ৬টি জয় ও ৪টি হারে তাদের পয়েন্ট ১২। ঘরের মাঠে তারা এখনও পর্যন্ত ৪টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১টি ম্যাচে জয় পেয়েছে।