পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এই ইস্যুকে সামনে রেখে দেশে হিন্দু–মুসলিম রাজনীতির বিষ বাতাস ছড়িয়ে পড়ছে। বিভেদ করে দেওয়ার যখন চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন দিঘার জগন্নাথধাম থেকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে সম্প্রীতির নিশান উড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিঘায় পা রেখেই এই মন্তব্য করেছেন সাংসদ–অভিনেতা দেব ওরফে দীপক অধিকারী। ইতিমধ্যেই এখন দিঘায় সাজসাজ রব। গতকাল সাংসদ জুন মালিয়া এসেছেন দিঘায়। মেদিনীপুর জেলার দুই সাংসদ এখন দিঘায়।
জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগের দিন সন্ধ্যায় দিঘায় মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে সমাজের নানা ক্ষেত্রের অতিথিদের ভিড় দেখা যায়। চা–চক্র শুরু হয়। সেখানে মিলিত হন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বর্ণময় সভায় মিলিত হয়ে সকলেই আপ্লুত। আর ওই অনুষ্ঠানের শেষে ধন্যবাদ দিতে উঠে দেব ওরফে দীপক অধিকারী বলেন, ‘সম্প্রীতির ঐতিহাসিক মিলনক্ষেত্র দিঘায় জগন্নাথধামকে সাক্ষী রেখে মুখ্যমন্ত্রী গোটা দেশকে বার্তা দিয়েছেন। আসলে দিঘায় এখন পর্যটনের সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার মিলন ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের সৈকতভূমিতে। বিভেদ উড়িয়ে বাংলা থেকে ফের সম্প্রীতির নিশান উড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলা চিরকাল দেশকে পথ দেখিয়েছে। এবারও মুখ্যমন্ত্রী সেই পরম্পরা বজায় রেখেছেন।’
দিঘায় শুধু জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করে সম্প্রীতির বার্তাই দেননি মুখ্যমন্ত্রী বরং তার সঙ্গে নজিরবিহীন সৌজন্যও দেখিয়েছেন। তাঁর বিরোধী সমস্ত দলের সিনিয়র নেতাদের এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতাকেও আমন্ত্রণ জানান তিনি। যাঁরা রোজ তাঁকে নানা কুকথা বলে থাকেন। আমন্ত্রিত এই বিশিষ্ট অতিথিদের চা–চক্রে বাংলা ও মুম্বইয়ের শিল্পীরা ছিলেন। কবি–সাহিত্যিক, বণিকসভা ও ময়দানের ক্রীড়াকর্তারাও হাজির হন। পুরীর মন্দির থেকে ৫৭ জন জগন্নাথদেবের সেবক এবং ইসকন থেকে ১৭ জন সাধুও সামিল হন। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘায় পৌঁছন। মঙ্গলবার বিশ্বশান্তির জন্য হয় মহাযজ্ঞ।
এই মহাযজ্ঞে পূ্র্ণাহুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের হাতে আরতিও করেন। মন্দিরের মাথায় ওড়ে ধ্বজা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মা–মাটি–মানুষের জন্য পুজো দিয়েছি। মা–মাটি–মানুষ ভাল থাকলেই আমি ভাল থাকব।’ আজ মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন ও জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিয়ম অনুযায়ী সেটা করবেন পুরীর রাজেশ দ্বৈতাপতি। মন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। লাইভ টেলিকাস্ট করা হবে। যাতে রাজ্যের সমস্ত মানুষ দেখতে পান। আসেন সৈকত শহর দিঘায়।