বয়স হলে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে। আর আগের মতো সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারেন না। সম্প্রতি তিন রাজ্যে কংগ্রেসের ফল নিয়ে ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের 'সেনাপতি'র সেই মতের সঙ্গে একমত নন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে বয়স নয়, মানুষের যোগ্যতাই ফ্যাক্টর।
সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বেশ কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে সাংসদ বলেন,'৯০ বছরের শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায়ের কি কোর্টে প্রোডাক্টিভিটি কমেছে? অনিন্দ্য মিত্র ব্যারিস্টার। তাঁর বয়স ৮৭। প্রোডাক্টিভিটি কমেছে? বয়স ফ্যাক্টর নয়। মানুষের যোগ্যতাই হলো ফ্যাক্টর।'
এই প্রসঙ্গে তিনি নিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তিনি নিজে মধ্য ষাটে। তা সত্ত্বেও আইনজীবী এবং সাংসদ হিসাবে কাজ করছেন। রাজনীতির ময়দানেও নিয়মিত রয়েছেন। সাংসদের কথায়,'ফিজিক্যালি ফিট এবং মেন্টালি অ্যালার্ট-এটাই গাইডলাইন হওয়া প্রয়োজন।'
(পড়ুন। রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকলেন শুভেন্দু, নির্বাচন কমিশনে জমা অভিযোগ)
সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'প্রবীণদের অভিজ্ঞতা প্রতিটা দলেই প্রয়োজন। কিন্তু একটা বয়সের পর প্রোজাক্টিভিটি কমে। তাই ক্রিকেট বা রাজনীতি সবক্ষেত্রেই বয়েসের ঊধ্বসীমা থাকা দরকার।'
তবে অভিষেকের এই বক্তব্য নতুন নয়। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনের পরও তিনি সত্তর-পঁচাত্তরের উপর রাজনীতি করার বিপক্ষে মত প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেন,'রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা বয়সসীমা থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। ষাট-পঁয়ষট্টি কিংবা সত্তর-পঁচাত্তর হোক, এই উপরে আর রাজনীতি করা উচিত নয়। মানুষ বছরে অবসর নেয়। সরকারি বা বেসকরারিক অফিসে মানুষ এর বেশি কাজ করে না। রাজনীতিও সেরকম ভাবেই করা দরকার।'
(পড়তে পারেন। ‘বিজেপি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে’, বিডিও’র নাক ভাঙার হুমকির জবাব দিল তৃণমূল)
তবে বয়স প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্দরে এই বিতর্ক অনকেদিন থেকে চলছে। এর আগে ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তাপস রায়, মদন মিত্র-সহ একাধিক নেতামন্ত্রী বয়সের কারণ অব্যাহতি চেয়েছিলেন। গত বছর কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেন,'২০২৬-এর পর আর ভোটে দাঁড়াব কিনা ভাবতে হবে। আমার খেলা দেখে নতুন প্রজন্ম শিখবে। আমি নিজেকে নিজের মতো গুটিয়ে নিয়েছি। বয়েসের ভার হচ্ছে।'
সেই সময় বিধায়ক তাপস রায়ও বলেছিলেন, 'গাভাসকরের মতো ফর্মে থাকতে থাকতে ক্রিজ ছাড়তে হবে।' তবে, বয়েস হলেই যে ক্রিজ ছাড়তে হবে তেমনটা মনে করছেন না সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।