‘হাম জং না হোনে দেঙ্গে... টিন বার লড় চুকে লড়াই, কিতনা মেহেঙ্গা সওদা... হাম জং না হোনে দেঙ্গে…’ ১৯৯৯ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি। বাসে চড়ে রাজনৈতিক সৌজন্য রক্ষা করতেই লাহোর গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। বলেছিলেন এই কথাগুলি। তখন অবশ্য দুই দেশের মধ্যে একরকম শান্তি চুক্তির মতো শুনিয়েছিল সেসব। কিন্তু বাসযাত্রার মাত্র কয়েক মাস পরেই ভারত পাকিস্তান কার্গিল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
দিলীপ-মুখে অটল আদর্শ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের সাক্ষাৎ নিয়ে বর্তমানে রাজ্য রাজনীতি তুঙ্গে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন দিলীপ। সেখানেই সৌজন্যের উদাহরণ দিতে গিয়ে অটলবিহারী বাজপেয়ীজির কথা বলেন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা। দিলীপের কথার সূত্র ধরেই, দেশের এই পরিস্থিতিতে ফিরে দেখা যাক সেই ১৯ ফেব্রুয়ারি দিনটি।
আরও পড়ুন - বাবা হতে চান? এই অভ্যাসগুলো ছাড়তে হবে যে! ছয় মাসেই বাড়বে স্পার্ম কাউন্ট

১৯ ফেব্রুয়ারির ‘বাস যাত্রা’
১৯ ফেব্রুয়ারির 'বাস যাত্রা' আদতে ছিল আস্থা তৈরির একটি পদক্ষেপ বা কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজার (বা সিবিএম)। ১৯৯৮ সালে কলম্বোতে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হয়। সেখানে এই বাসযাত্রার সিদ্ধান্ত যৌথভাবে নেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং তৎকালীন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরীফ । ঘটনাচক্রে, ওই বছরের শুরুতেই দুই প্রতিবেশী দেশ পারমাণবিক পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করেছিল। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এই ঘটনা।
আন্তর্জাতিক চাপে রাজনৈতিক সৌজন্য
এর জেরে দুই দেশের নেতার উপরেই আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয়। বিশেষ করে মার্কিন মুলুকের তরফে। দুই দেশের মধ্যে যে সুসম্পর্ক রয়েছে, তা প্রমাণ করার এক চাপ আসে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের উপরেই। নতুবা নিষেধাজ্ঞা বার্তাও এসেছিল আন্তর্জাতিক স্তরে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্কের নজির গড়তে বাজপেয়ী অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেন। পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধ সত্ত্বেও এই বাস যাত্রা করেন। এবং পাকিস্তান দেশ সৃষ্টির প্রতীকী সৌধ মিনার-ই-পাকিস্তান পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন - হবু মায়ের সামান্য স্ট্রেসেও বিপদ হয় শিশুর, মনমেজাজ ফুরফুরে রাখতে কী করা উচিত?
ভারত যা চেয়েছিল তখন
প্রাক্তন রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) প্রধান এএস দুলাত তাঁর ‘কাশ্মীর: দ্য বাজপেয়ী ইয়ার্স’ বইয়ে লিখছেন, বাজপেয়ী শুধু স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেননি, সেখানকার ভিজিটরস বুকে লিখে দিয়েছিলেন: ‘ভারত একটি স্থিতিশীল, নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ পাকিস্তান চায়। পাকিস্তানের কেউ যেন ভারতকে সন্দেহ না করে। ভারত আন্তরিকভাবে পাকিস্তানের মঙ্গল কামনা করে।’ রাজনৈতিক সৌজন্যের প্রসঙ্গ উঠলে এই বৃহত্তর সৌজন্যের উদাহরণ স্বাভাবিকভাবেই আলোচনার পরিসরে চলে আসে। বৃহস্পতিবার অটলবিহারী বাজপেয়ীর কথা বলে তাঁর এই চিন্তাধারার কথাই কি তুলে ধরলেন দিলীপ? এই বিজেপির কথাই কি বোঝাতে চাইলেন পরোক্ষভাবে? তা এখনও স্পষ্ট নয়।