স্বপ্নের পহেলগাঁওয়ে ঘুরতে গিয়ে সবকিছু পালটে গিয়েছে। কেড়ে নিয়েছে বাবাকে। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বাবার। তছনছ হয়ে গিয়েছে জীবন। তারইমধ্যে নিজের স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে নয়া জিয়নকাঠি পেলেন পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় নিহত সমীর গুহের মেয়ে শুভাঙ্গী। গত ২২ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত যে স্বপ্নগুলো দেখছিলেন, তাতে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করেছে আইএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট। কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এক্সামিনেশনের (সিআইএসসিই) দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় ৮৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন ১৭ বছরের শুভাঙ্গী।
কী নিয়ে পড়তে চান শুভাঙ্গী?
তবে আইএসসি পরীক্ষায় আরও কিছুটা বেশি নম্বর পাবেন বলে আশা করেছিলেন বেহালার সখেরবাজারের মেয়ে। সেই লক্ষ্যপূরণ না হলেও থেমে যেতে রাজি নন। বরং কলকাতার প্রথমসারির কলেজে মনোবিজ্ঞান বা সাইকোলজি নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়তে চান বলে সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিজের যাবতীয় মনোযোগ দিতে চান পড়াশোনায়। উজাড় করে দিতে চান নিজেকে। পূরণ করতে চান নিজের স্বপ্ন।
যে কোনও অ্যাকশন নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন মোদী
আর যখন নতুন করে সেই স্বপ্ন দেখছেন শুভাঙ্গী, তখন পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সেই ঘটনার পরে দেড় সপ্তাহ কেটে গেলেও পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানো জঙ্গিদের এখনও ধরা যায়নি। তবে জঙ্গিদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। কঠোরভাবে চলছে জঙ্গি-নিধন অভিযানও। পহেলগাঁও হামলার বদলা নিতে ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ুসেনা এবং ভারতীয় নৌসেনাকে যে কোনও পদক্ষেপ করার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে গোড়ার দিকে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মোদী নির্দেশ দিয়েছেন যে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলা নিতে যে কোনও সময়, যা খুশি পদক্ষেপ করতে পারে ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ুসেনা এবং ভারতীয় নৌসেনা। কীভাবে ‘অ্যাকশন’ নেওয়া হবে, কী পরিকল্পনা করা হবে, কেমনভাবে অভিযান চালানো হবে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তিন সামরিক বাহিনীর হাতে দিয়েছেন।
নিহত সমীর গুহের বাড়িতে আসেন NIA গোয়েন্দারা
তারইমধ্যে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনায় তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। তদন্তের জন্য সখেরবাজারে শুভাঙ্গীদের বাড়িতেও এসেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, নিহত সমীরের স্ত্রী জানিয়েছেন যে ২২ এপ্রিল আচমকা কয়েকজন তাদের ঘিরে নিয়েছিল। তারপর সবাইকে নীচে বসতে পড়েছিল। আর প্রত্যেকের দিকে বন্দুক তাক করা ছিল। সেখান থেকে কয়েকজনকে বেছে-বেছে গুলি চালানো হয়েছে। আর যে ঘটনায় মোট ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।