উত্তরপ্রদেশের আগ্রার বিরিয়ানি দোকানের এক কর্মীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই দোকানের আরও এক কর্মী। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে এমনই জানানো হয়েছে। আর সেই ঘটনার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে, যাতে ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে দু'জন। যারা নিজেদের ক্ষত্রিয় গোরক্ষক দলের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। আর দাবি করেছে যে পহেলগাঁও হামলার বদলা নিয়েছে।
আরও পড়ুন-পাকিস্তানকে ভেঙে দিন, পুরো কাশ্মীর চাই ভারতের! মোদীর পাশেই কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহত গুলফাম আলি তাঁর খুড়তুতো ভাই শাহিদ আলির বিরিয়ানির দোকানে কাজ করতেন। বুধবার মধ্যরাতে হঠাৎ কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি স্কুটিতে করে এসে গুলফামকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ওই সময় দোকান মোছার কাজ করছিল অপর এক কর্মী সাইফ। হামলাকারীরা এসে কোন কথা না বলেই গুলফামের বুকে গুলি ছোড়ে। সাইফ তখন বেরিয়ে আসলে তাঁর দিকেও গুলি ছোড়া হয়। তবে গুলিটি তার ঘাড়ে লাগায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
এই ঘটনার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়োয় ভাইরাল হয়েছে। যদিও সেই ভিডিয়োয় সত্যতা যাচাই করেনি 'হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা'। ভিডিয়োয় দুটি পিস্তল এবং কোমরে ছুরি নিয়ে সশস্ত্র দুই ব্যক্তিকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'ভারতমাতার নামে শপথ নিচ্ছি, যদি আমরা ২৬ জন হত্যার প্রতিশোধ ২,৬০০ জন দিয়ে না নিই, তাহলে আমি ভারতমাতার সন্তান নই।' ভিডিয়োয় ওই হামলাকারীরা নিজেদেরকে ক্ষত্রিয় গোরক্ষক দলের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। ভিডিয়োয় এক ব্যক্তি নিজেকে মনোজ চৌধুরী বলে দাবি করেছে। তবে তার সঙ্গে থাকা অপর ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন-পাকিস্তানকে ভেঙে দিন, পুরো কাশ্মীর চাই ভারতের! মোদীর পাশেই কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে, ভিডিয়োয়টি ভাইরাল হতেই স্থানীয় পুলিশ দাবি করেছে, আগ্রায় কোনও গো-রক্ষক দল সক্রিয় নেই। ওই হামলাকারী রাজনৈতিক ফায়দা পেতে এখন নিজেকে ক্ষত্রিয় গোরক্ষক দলের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। ইতিমধ্যে তাজগঞ্জে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
আগ্রার পুলিশ কমিশনার দীপক কুমার জানান, কয়েকদিন আগে বিরিয়ানির দোকানে খাবারের মান নিয়ে বচসার পর এই খুনের ঘটনা ঘটে। ভিডিয়োর মাধ্যমে ওই ব্যক্তিরা প্রচারের জন্য এটি করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে চারজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে একজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে নিহত যুবকের মা জুবাইদা কাঁদকে কাঁদতে বলেন, 'কাশ্মীরের হামলার বদলা যদি তারা নিতে চাইত, তারা গুলফামকে মারধর করতে পারত। তার হাত-পা ভেঙে দিতে পারত। এতে সে অন্তত বেঁচে থাকত।' তিনি আরও জানান, কয়েকদিন আগে গুলফামকে বলেছিলেন গরমে তার কষ্ট হয়। এজন্য তার ছেলে ঘরে কুলার কিনে এনেছিল।