চাকরি দেওয়ার নাম করে ৫ লক্ষ টাকা নেওয়ার পর যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ। মাস দেড়েক আগে সেই অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তবে অভিযোগ উঠেছে, তারপর থেকেই লাগাতার হুমকি, এমনকী মারধরও করা হচ্ছিল নির্যাতিতার পরিবারকে। যার ফলে তাঁরা আতঙ্কে ছিলেন। কোচবিহারের সেই ঘটনায় নির্যাতিতাকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: নাবালিকাকে ধর্ষণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ধৃত ৬৫-র বৃদ্ধ, মসজিদে ছোড়া হল পাথর
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে ওই যুবতীকে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে, যাতে তাঁকে কোনওরকমের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা না হয়। অন্যদিকে, নির্যাতিতার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত নেতার পরিবার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই এফআইআর নিয়ে আদালতের পরবর্তী নির্দেশ ছাড়া পুলিশ কোনওরকমের পদক্ষেপ করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার নাম আবদুল মান্নান। মামলার বয়ান অনুযায়ী, অভিযোগ উঠেছে যে এক ব্যক্তিকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তির মেয়েকে চাকরি করিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, দীর্ঘ সময় পরে চাকরি না হওয়ায় আবদুল মান্নানের কাছে টাকা চাইতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু, আবদুল মান্নান নানান টালবাহানা শুরু করেন এবং টাকা দিতে অস্বীকার করেন।
শুধু তাই নয়, নির্যাতিতাকেও হুমকি দেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, গত ১৪ মার্চ চাকরির ইন্টারভিউ রয়েছে বলে তৃণমূল নেতা নিজে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে গাড়িতে করে নিয়ে যান। অভিযোগ, এরপর একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভয় দেখিয়ে যুবতীকে ধর্ষণ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতার ছবি এবং ভিডিয়ো করে সেগুলি মোবাইলে রেখে দেন। টাকা চাইলে সেই ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন অভিযুক্ত। এছাড়াও, অভিযুক্ত নির্যাতিতাকে মদ খাওয়ার জন্য জোর করেন। কিন্তু, মদ খেতে অস্বীকার করলে অভিযুক্ত তাঁর মাথায় মদের বোতল দিয়ে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। যুবতীর চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন সেখানে ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।
ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে থানায় প্রতারণা এবং ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা। পরে অভিযুক্ত নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। যদিও অভিযুক্তর দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। পরে তৃণমূল নেতার পরিবারের তরফ থেকে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে তৃণমূল নেতা গ্রেফতারের পর থেকেই নির্যাতিতার বাড়িতে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তারপরেই নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা। সেই মামলায় এমন নির্দেশ হাইকোর্টের।