দিঘায় রাজ্য সরকারের তৈরি জগন্নাথ ধামের উদ্বোধনে হাজির হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধযায়ের সঙ্গে দেখা করায় দলের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। এমনকী বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু দিলীপবাবুর এই পদক্ষেপ নিয়ে গোটা দিন কোনও মন্তব্য করেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বাকচায় মুখ খুললেন তিনি। সেখানে তৃণমূলি দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত বিজেপি কর্মী বিজয় ভুঁইয়ার স্মরণসভায় যোগদান করে নাম না করে দিলীপ ঘোষের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন তিনি।
দিলীপ ঘোষের জগন্নাথ ধাম দর্শনকে তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন অনুগামীরা। এদিন দিলীপবাবুর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রথমে কিছু বলতে চাননি শুভেন্দুবাবু। এর পর তিনি নাম না করে বলেন, আমাদের লড়াই ভাইপোকে জেলে পাঠানো ও পিসিকে প্রাক্তন করার লক্ষ্যে। আজকে বাকচায় বসে আছি বিজয় ভুঁইয়ার আত্মবলিদান দিবসে। আগামীকাল পশ্চিমবঙ্গে ভয়ঙ্কর ২ মের চতুর্থ বর্ষপূর্তি। আমাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা, ব্যক্তিগত আনন্দ – ফুর্তি করতে পারি না। যতক্ষণ না ২৫০টি আত্মবলিদানকারীর পরিবারের ঋণ আমরা শোধ করতে না পারি।’
বলে রাখি, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দুবাবু। তার পর থেকেই অবিভক্ত মেদিনীপুরের দখল কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিবাদের সূত্রপাত। যার জেরে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিজের আসন মেদিনীপুর ছেড়ে বর্ধমান – দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়তে হয় দিলীপবাবু। যার জেরে হার হয় তাঁর। ওদিকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর বিরোধী দলনেতার পদ পান শুভেন্দু অধিকারী। ক্ষমশ বৃদ্ধি পায় তাঁর প্রভাব। ওদিকে ওই ভোটের পর দলের নিয়ম মেনে দিলীপবাবুকে রাজ্য সভাপতির পদ ছেড়ে দিতে হয়। এর পর দলে ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের লক্ষ্য করে যে বিক্ষোভ হয়েছে তাও শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদেরই কাজ বলে মনে করা হচ্ছে।