পাহাড়ের অভয়ারণ্যে শেষবার রেড পান্ডা গণনা হয়েছিল ২০১৯ সালে। সাত বছর পর ফের চলতি বছরে পাহাড়ের জঙ্গলে রেড পান্ডা গণনা করতে চলেছে রাজ্য বন বিভাগ। আগামী মাসে পাহাড়ের দুটি জাতীয় উদ্যান দার্জিলিংয়ের সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান এবং কালিম্পিংয়ের নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যানে রেড পান্ডা গণনা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি। তিনি জানান, মে মাসে এই গণনা হবে।
আরও পড়ুন: রেড পান্ডা সংরক্ষণ-প্রজননে বিশ্বে সেরা তিনের তালিকায় দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানা
মুখ্য বনপাল বলেন, ‘দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ের জাতীয় উদ্যানগুলিতে রেড পান্ডা শুমারির পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে প্রজাতির বর্তমান পরিসংখ্যান নির্দিষ্টভাবে জানা যায়। ইতিমধ্যেই এরজন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০১৯ সালের পর আবার এবছর রেড পান্ডা গণনা হবে। সাধারণত লাজুক প্রকৃতির এই বন্য প্রাণীদের পূর্ব হিমালয় পর্বতমালা বরাবর বাংলা এবং পার্শ্ববর্তী সিকিমের উচ্চ-উচ্চ বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭,৫০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান। পাহাড়ে এটি ৮,০০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অবস্থায় গণনার ক্ষেত্রে আবহাওয়া একটি বড় বাধা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বন কর্তারা। ভাস্কর বাবু জানান, পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে রেড পান্ডা সুমারি নির্ধারিত সময়সূচী মতো চলবে। রেড পান্ডার সংখ্যা অনুমানে সাহায্যের জন্য মলের নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হবে বলে তিনি জানান।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের সুমারি অনুযায়ী, দার্জিলিংয়ের অভয়ারণ্যে রেড পান্ডা রয়েছে ৩৫টি এবং কালিম্পংয়ের জঙ্গলে রয়েছে ৩১ টি। সেই সংখ্যা কতটা বেড়েছে তা গণনার পরেই জানা যাবে। উল্লেখ্য, এই প্রাণীকে বিপন্ন প্রজাতির বলে ঘোষণা করেছে আইইউসিএন। ২০০৩ সাল থেকেই রেড পান্ডা সংরক্ষণ এবং প্রজননের মাধ্যমে সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছে বন বিভাগ।
দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিক্যাল পার্ক গত ২২ বছর ধরে এই প্রজনন কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। এখনও পর্যন্ত এই চিড়িয়াখানার তরফে ১২টি রেড পান্ডাকে জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে। আন্তজার্তিক স্তরেও রেড পান্ডা প্রজনন ও সংরক্ষণে খ্যাতিলাভ করেছে এই চিড়িয়াখানা। শুধু প্রজননই নয়, ডিএনএ উন্নত করার জন্য জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রেলিয়া থেকে রেড পান্ডা দম্পতি আনা হয়েছে এখানে।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড পান্ডার মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি সংরক্ষণে অনেক পদক্ষেপ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে রেড পান্ডা গণনা করা হবে।