সপ্তাহান্তে দক্ষিণ ইরানের অন্যতম ব্যস্ত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে গেল! ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে কমপক্ষে চারজনের। আহত হয়েছেন অন্তত ৫১৬ জন। সেদেশের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অনুসারে - আজ (শনিবার - ২৬ এপ্রিল, ২০২৫) স্থানীয় একটি বন্দরে এই বিস্ফোরণ ঘটে এবং তার ফলে সেখানে আগুন লেগে যায়।
জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণটি ঘটেছে বন্দর আব্বাসের ঠিক বাইরে শাহিদ রাজাই পোর্টে। প্রত্যক বছর এই বন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি ও রফতানি করা হয়। তথ্য বলছে, এর পরিমাণটা প্রায় ৮০ মিলিয়ন টন।
সোশাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণের ঠিক পরের মুহূর্তের নানা ছবি ও ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণের পর কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে বিস্ফোরণস্থলের আকাশ। কিছু ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণের তীব্রতার জেরে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বহুতলের জানলার কাচ ভেঙে চৌচির হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু, লক্ষ্যণীয় বিষয় হল - এদিনের এই বিস্ফোরণের পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও শেষ পাওয়া খবর অনুসারে - কর্তৃপক্ষের তরফে এর কারণ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে, বিস্ফোরণের মাত্রা যে ভয়াবহ ছিল, তা একাধিক ছবি ও ভিডিয়োতেই স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, ইরানে এই ধরনের বিস্ফোরণ নতুন কিছু নয়। কারণ, সেখানকার তৈল উত্তোলন সংক্রান্ত পরিকাঠামোগুলি মান্ধাতার আমলের। ফলে সেগুলি একেবারেই লড়ঝড়ে হয়ে গিয়েছে। ইরানের উপর আন্তর্জাতিক বহু বিধিনিষেধ থাকায় সেগুলির হাল ফেরানো সম্ভব হয়নি। ফলে মাঝেমধ্যেই সেই সমস্ত জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটে। যদিও শনিবারের ঘটনায় এমন সমস্ত সম্ভাবনা একেবারেই প্রথমেই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেদেশের সরকারি টিভি চ্যানেলের তরফে।
আঞ্চলিক বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক সদস্য জানিয়েছেন, শহরের রাজাই পোর্টে রাখা কন্টেনারগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে। কিন্তু, এর বাইরে কোনও তথ্য দেননি তিনি। সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আরও দাবি করা হয়েছে, বিস্ফোরণের ফলে নাকি একটি বাড়ি ধসে পড়েছে। কিন্তু, সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে রাজাই পোর্টের দূরত্ব প্রায় ১,০৫০ কিলোমিটার। পারস্য উপসাগরের এই সঙ্কীর্ণ এলাকা হয়ে প্রায় ২০ শতাংশ তেলের বাণিজ্য হয়।
প্রসঙ্গত, শনিবারের এই বিস্ফোরণের আগেই সম্প্রতি ওমানে মুখোমুখি হয়েছিলেন আমেরিকা ও ইরানের প্রতিনিধিরা। ইরান লাগাতার তাদের পরমাণু কর্মসূচি বাড়িয়ে চলেছে। সেই প্রেক্ষাপটে এটি ছিল দুই পক্ষের মধ্যে তৃতীয় সমঝোতা বৈঠক।