বছরের শুরুতে মুক্তি পেয়েছিল তনুশ্রী চক্রবর্তী অভিনীত ‘রিভলভার রহস্য’, সেই ছবি সাফল্য পায়নি। এবার সম্পর্কের গল্পে মলাট চরিত্রে নায়িকা, সঙ্গী ঈশান মজুমদার। দু বার মুক্তি পিছানোর পর অবশেষে শুক্রবার (২৪শে মার্চ) মুক্তি পাচ্ছে অর্ঘ্যদীপ চট্টোপাধ্যায়ের ‘চিরসখা হে’। ছবি থেকে ব্যক্তিগত জীবন, একান্ত আড্ডায় ধরা দিলেন তনুশ্রী চক্রবর্তী।
দেখতে দেখতে ইন্ডাস্ট্রিতে ১৩ বছর, কেমনভাবে দেখেন নিজের এই জার্নিটা?
তনুশ্রী: এক কথায় ইভেন্টফুল। অনেক কিছু পেয়েছি, অনেক কিছু শিখেছি। জীবন অনেক কিছু শিখিয়েছে, অনেক দিয়েছে।
কোনও আফসোস রয়েছে?
তনুশ্রী: কোনও আফসোস নেই। পাওয়াটাই বেশি। তবে অনেককিছু করতে চাই, ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক কিছু দিতে চাই।
সামনেই 'চিরসখা হে'-র মুক্তি। অর্ঘ্যদীপের (চট্টোপাধ্যায়) মতো ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকারের সঙ্গে কাজ। এই ছবির কোন জিনিসটা আপনাকে টানল?
তনুশ্রী: চিত্রনাট্য়টা প্রথমবার শুনেই আমার দারুণ লেগেছিল। চরিত্রটা যেভাবে অর্ঘ্যদীপ সাজিয়েছে খুব সুন্দর। আমি আগে এ ধরণের চরিত্র আগে করিনি। তিলোত্তমা (তনুশ্রী অভিনীত চরিত্র) খুব সোজা মেয়ে। যে পরিস্থিতিতে মেয়েটা পড়ে সেগুলো সহজ নয়, ভীষণ কঠিন। এর জেরেই জটিলতা তৈরি হতে শুরু করে।
এই ছবিতে একদম মলাট চরিত্রে আপনি, ছবির নামটা ভীষণ রোম্যান্টিক। এটা কী আদ্যোপান্ত প্রেমের ছবি?
তনুশ্রী: এই ছবিটা কিন্তু ভালোবাসার ছবি, প্রেমের ছবি নয়। ভালোবাসা মানে সম্পর্ক, সেটা মানুষের সঙ্গে মানুষের আবার মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির। এই ধরণের ছবি দর্শক পছন্দ করে। এটা পরিবার নিয়ে, বন্ধুদের নিয়ে হইহই করে দেখতে যাওয়ার ছবি।
২০২৩-র শুরুটা বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একদম ভালো হয়নি, আপনার রিভলভার রহস্যও বক্স অফিস সফল নয়, বিষয়টা কীভাবে দেখছো?
তনুশ্রী: অনেকের কিন্তু ছবিটা ভালো লেগেছে। তবে সবার কাছে ছবিটা পৌঁছায়নি। আসলে সময় কিন্তু খুব বেশি ম্যাটার করে। পাঠানের আগে কিন্তু বলিউডও খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছে, ব্রহ্মাস্ত্র ছিল গত বছরের শেষ হিট। দর্শকদের মধ্যে কিন্তু এখন বিভাজন হয়ে গিয়েছে। অনেকেই ওটিটিকে বেছে নিয়েছেন। কোনও ছবি হয়ত বক্স অফিসে চলেনি, তবে ওটিটিতে বা টিভিতে মানুষ সেটা দেখতে চায়। তাই হয়ত মুক্তির সময়ে ছবিটা হিট করল না, কিন্তু পরে সেটা দর্শক পছন্দ করল। ছবির হিট হওয়াটা অনেকভাবেই নির্ধারিত হয়।

চিরসখা হে-র একটি দৃশ্যে তনুশ্রী ও ইশান (ছবি সৌজন্যে- ইউটিউব স্ক্রিনশট)
ছবির নাম তো ‘চিরসখা হে’, তনুশ্রী কি বাস্তব জীবনে ‘চিরসখা’র খোঁজ পেয়েছে এখনও?
তনুশ্রী: না, এখনও তো পাইনি। তবে আমি দূরবীণ নিয়ে চিরসখার খোঁজ করছি না। যদি কারুর আসার হয় সে আসবে, না আসার হয় তাহলে সময় বলে দেবে।
তাহলে তনুশ্রী কি এখন সিঙ্গেল?
তনুশ্রী: হ্যাঁ, একদম।
আজকাল তো সর্বত্রই বিয়ে নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তনুশ্রী কবে সাত পাক ঘুরছে? কোন পরিকল্পনা?
তনুশ্রী: সময় উত্তর দেবে। আসলে জন্ম, মৃত্যু আর বিয়ে-- এটা তো কারুর হাতে নেই। দেখা যাক তবে
আচ্ছা, এই ছবি তো ভালোবাসা আর সেক্রিফাইসের গল্প। আপনি তো একাধিকবার প্রেমে পড়েছেন, প্রেমে কখনও সেক্রিফাইস করেছেন?
তনুশ্রী: প্রেমের ক্ষেত্রে আমি তো শুধু সেক্রিফাইসই করেছি। পুরোটাই ত্যাগ আর ত্যাগ। আসলে প্রেমে ত্যাগটা খুব কমন ব্যাপার, সেটা সকলকেই করতে হয় বোধহয়।
সবাই বলে ইন্ডাস্ট্রিতে সকলে তনুশ্রীর বন্ধু, আপনি সবার সঙ্গে সম্পর্ক মেনটেন করে চলেন। এর রহস্যটা কী?
তনুশ্রী: আমি কারুর সঙ্গে সম্পর্ক মেনটেন করি না। সবাই আমাকে বিশ্বাস করে, আমার উপর বিশ্বাস রাখে, এইটুকুই বলব।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রচলিত কথা, নায়িকারা ভালো বন্ধু হয় না। অথচ নুসরত-শ্রাবন্তীদের সঙ্গে আপনার বন্ডিং খুব স্ট্রং..
তনুশ্রী: যারা এটা বলে ভুল বলে। একদম বাজে কথা। শ্রাবন্তী, নুসরত-- সবাই আমার খুব ভালো বন্ধু। আসলে বন্ধুত্ব রাখাটা নিজেদের উপর নির্ভর করে।
ইন্ডাস্ট্রিকে আপনার সবচেয়ে বড় কম্পিটির কে?
তনুশ্রী: কেউ নয়। আমি নিজেই নিজের কম্পিটিশন, আমি বিশ্বাস করি নিজেকে ছাপিয়ে যেতে হবে, নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে।
রাজনীতিতে এসে সমালোচনার শিকার, বেরিয়ে গিয়েও। লাগাতার এই ট্রোল আর্মি-কে সামলান কী করে?
তনুশ্রী: আমি আমার নিজের কাজে ফোকাস করি। আমি যেটা করতে চাই, সেটাই করি। আমি বাকিটা খুব বেশি ভাবি না। যেটা আমার হাতে নেই, আমার কন্ট্রোলে নেই সেটা নিয়ে আমি ভাবি না, এইটুকুই বলব।
নিয়োগ-দুনীর্তি নিয়ে সরগরম টলিউড, গোটা ইন্ডাস্ট্রিকেই অনেকে কাঠগড়ায় তুলছেন। আপনি এই ইন্ডাস্ট্রির সদস্য হিসাবে কী বলবেন?
এই ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না। এটা কিছুটা মিডিয়া, কিছুটা তদন্ত… আমার সত্যি কিছু বলার নেই। আমি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।
সামনেই মায়া মুক্তি পাচ্ছে, সেখানে লেডি ম্যাকবেথের চরিত্রে। শোনা যাচ্ছে, সামনেই আপনি বলিউডে ডেবিউ করছেন, সানি দেওলের বিপরীতে… (প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই)
আমি এই নিয়ে (বলিউড ডেবিড) কোনও কিছু বলতে পারব না। সরি। ‘চিরসখা হে’র পর রাজর্ষিদা-র 'মায়া' আসছে। সেটা নিয়ে বলব খুব চ্যালেঞ্জিং একটা চরিত্র। দেখা যাক দর্শকের কাছে পৌঁছালে মানুষ সেটা কীভাবে গ্রহণ করবে।