প্রাথমিক ভাবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিয়েও জেএমএম-কংগ্রেস জোটের থেকে অনেকটাই পিছিয় পড়ল বিজেপি জোট। এই আবহে বাবুলাল মারান্ডি বললেন, 'এই যে ফলাফল সামনে আসছে, তা খুবই প্রাথমিক। আমি খবর নিয়েছি। অনেক জায়গায় খুব কম ভোটের ব্যবধানে আগিয় পিছিয়ে আছেন প্রার্থীরা। ১-২ রাউন্ডে সেভাবে ভোটের ফলাফল বোঝা যায় না।' এদিকে ঝাড়খণ্ডে কি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ইস্যুতে প্রচার করার খেসারত দিতে হচ্ছে বিজেপিকে? এই বিষয়ে বাবুলাল মারান্ডি বলেন, 'এভাবে বলা যায় না। এক এক অঞ্চলে এক এক ধরনের ইস্যু। অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীদের ইস্যু ছিল। অনক জায়গায় দুর্নীতি ইস্যু ছিল।' (আরও পড়ুন: WB Bypoll Result: ৬-০ হচ্ছে বাংলায়, কোন আসনে কত ভোটে এগিয়ে তৃণমূল?)
উল্লেখ্য, বিগত দিনে ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীদের মন সেভাবে জয় করতে পারেনি বিজেপি। এরই মধ্যে আবার আদিবাসীদের মধ্যে অভিন্ন দেওয়ান বিধি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। যদিও বিজেপি দাবি করেছে, আদিবাসীদের ইউসিসি থেকে আলাদা রাখা হবে। তার মধ্যে সাঁওতাল পরগনার এলাকাগুলিতে বিজেপি লোকসভায় সেভাবে ভালো ফল করতে পারেনি। এই আবহে আদিবাসীদের মন ঘোরাতে ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যুকে হাতিয়ার করতে চেয়েছিল বিজেপি। তবে তাতে ভোটবাক্সে খুব একটা লাভ হল না বিজেপির। উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডে ইন্ডিয়া জোট অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের থেকে। সেখানে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা আপাতত একাই ৩১টি আসনে এগিয়ে আছে। সেখানে কংগ্রেস এগিয়ে আছে ১৩টি আসনে। আরজেডি এগিয়ে ৫টি আসনে। সিপিআইএমএল লিবারেশন এগিয়ে ১টি আসনে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে পিছিয়ে পড়তেই বিস্ফোরক উদ্ধবের দলের নেতা, আদানিকে তুললেন কাঠগড়ায়
উল্লেখ্য, এর আগে ঝড়খণ্ডে নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্য জুড়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বসবাসের জায়গা করে দিচ্ছে সরকারপক্ষ। প্রধনমন্ত্রী বলেছিলেন, 'তোষণার রাজনীতিকে চরমে নিয়ে গিয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস এবং আরজেডি। এই তিনটি দলই অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোট পাওয়ার জন্যে এদের গোটা রাজ্যে বসবাসের জন্যে জায়গা করে দিচ্ছে এই তিনটি দল। পরিস্থিতি এখানে এমন হয়ে গিয়েছে যে সরস্বতী বন্দনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে বিপদ কতটা বড়। যখন উৎসবে পাথর ছোঁড়া হয়, দুর্গা মাকেও আটকে দেওয়া হয়, যখন কার্ফু জারি করা হয়, তখন জানা যায়, যে পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। মেয়েদের সঙ্গে বিয়ের নাম করে প্রতারণা হচ্ছে। তখন বুঝতে হবে, জল মাথার ওপর দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে। যখন অনুপ্রবেশের মামলা আদালতে যায়, কিন্তু প্রশাসন সেটা অস্বীকার করে, তখন বুঝতে হবে সরকারতন্ত্রেই অনুপ্রবেশ হয়ে গিয়েছে।' (আরও পড়ুন: Jharkhand Election Result: ঝাড়খণ্ডে ফিরছে হেমন্ত? অনেকটাই পিছিয়ে পড়ছে BJP)
আরও পড়ুন: Bypoll Result LIVE: এগিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, UP উপনির্বাচনে যোগীর মুখে হাসি
এদিকে এই একই ইস্যুতে বাংলার উদাহরণ তুলে ধরে অমিত শাহ বলেছিলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি। কারণ সেখানে স্থানী প্রশাসনই অনুপ্রবেশে মদত দেয়। ঝাড়খণ্ডেও একই কারণে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন এখানেও অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখানে বিজেপি সরকার গঠন হলে দলের নেতা-কর্মী থেকে মুখ্যমন্ত্রী, সবাই অনুপ্রবেশ আটকাবেন। অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানো হবে দেশ থেকে।' শাহ আরও বলেছিলেন, 'সাঁওতাল পরগনায় আদিবাসী মানুষের সংখ্য়া ক্রমেই কমছে। অনুপ্রবেশকারীরা আসছে দলে দলে। আমাদের মেয়েদের বিয়ের প্রলোভন দেখাচ্ছে। তাদের জমি দখল করছে। এটা যদি বন্ধ করা না যায় তবে ঝাড়খণ্ডের পরিচিতি, তাদের সংস্কৃতি, কাজের সুযোগ, জমির অধিকার, মেয়েদের সুরক্ষা কোনওটাই রক্ষা করা যাবে না। সেকারণেই বিজেপি স্লোগান তুলছে - রোটি, বেটি আর মাটি। ঝাড়খণ্ডে নারী নির্যাতনকারী অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।'