১৭ বছরের এক কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে যথেষ্ট আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ, ওই কলেজ ছাত্রীর বাবা গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক 'শহিদ' বলে দাবি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, মৃতার পরিবারের দাবি, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় ওই কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল। যদিও প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে। তবুও, মৃতার বাবার পরিচয় এবং সাম্প্রতিক গণধর্ষণের বিষয়টি সামনে আসার পর সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন স্থানীয় থানার পুলিশ। মৃতার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো' অনুসারে - গতকাল (শনিবার - ২৬ এপ্রিল, ২০২৫) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ ওই কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি ঘটে শেখেরটেক এলাকায়। যদিও ওই ছাত্রী আদতে পটুয়াখালির দুমকি গ্রামের বাসিন্দা ছিল।
শনিবার রাতে সবার প্রথমে মেয়েটির কাকাকে তাঁর ভাইঝির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা জানানো হয়। এই খবর পেয়েই শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে যান ওই ব্যক্তি। তিনিই পরবর্তীতে সংবাদমাধ্যমে ভাইঝির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মেয়েটির কাকা জানান, তিনি নিজে শনিবার রাত ১১টা নাগাদ এই অঘটনের খবর পান।
স্থানীয় থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তাদের প্রাথমিক অনুমান, ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। তবে, এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এবং আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও ঘোষণা করার আগে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া এবং অন্যান্য তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখা দরকার বলে তদন্তকারীদের তরফে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।
প্রয়াত কিশোরীর মা জানিয়েছেন, গত বছরের (২০২৪) ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ঢাকা শহরের মহম্মদপুরে তাঁর স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। সেই ঘটনার ১০ দিন পর ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা তাঁদের পরিবারের উপর বিরাট আঘাত ছিল।
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১৮ মার্চ (২০২৫) সন্ধ্য়ায় দাদুর বাড়ি থেকে ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয় ১৭ বছরের ওই কিশোরী। গত ২০ মার্চ সেই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাতে দুই নাবালককে গ্রেফতার করা হয়। সব মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল এই পরিবারটি। আর এবার ঘটে গেল আরও এক অঘটন!