বাংলাদেশে এখন অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। সেখানে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চরমে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ। তাই ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চলে আসতে চাইছেন বিপুল পরিমাণ মানুষ। এই আবহে বাংলাদেশে নোঙর করা জাহাজে একসঙ্গে সাতজনের মৃতদেহ মিলল। আর একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায়। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে পদ্মাপারে।
গতকাল নীলকমল ইউনিয়নের মাঝের চর নামে একটি জায়গা আছে। সেখান থেকে মৃতদেহ এবং আহতদের উদ্ধার করে বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌ পুলিশ। পুলিশের অনুমান, এই ঘটনা ঘটেছে জাহাজে ডাকাতি করতে আসা এবং বাধা দেওয়ার জেরে। তবে এটা প্রাথমিক অনুমান। নিহত ব্যক্তিরা হলেন—জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল এবং মাজেদুল ইসলাম। আর একজনের পরিচয় অজানা। আহত হন জুয়েল। এঁদের সবারই বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল জেলায়। এই তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশের নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান। তবে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় পেতে চলেছে স্থায়ী উপাচার্য, সরকারি বিজ্ঞপ্তিও জারি
আজ, মঙ্গলবার এই ঘটনা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে ওপার বাংলায়। মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের আর একটি জাহাজ মুগনি–৩–এর মাস্টার বাচ্চু মিয়া এবং গ্রিজার মহম্মদ মাসুদ জানান, সার বহনকারী আল বাখেরাহ রবিবার বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসে। এই কোম্পানির মালিক শিপন বাখেরাহ জাহাজে ফোন করে কাউকে পাননি। তখন ওই জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয় মুগনি জাহাজকে। তখন ওই পথে যাওয়ার সময় বাখেরাহ জাহাজটি দেখতে পান মুগনি জাহাজের কর্মীরা। জাহাজের লোকদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ফোন করেন তাঁরা।
এছাড়া এই ঘটনা জানাজানি হতেই বাংলাদেশের কোস্টগার্ড এবং নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমানের উপস্থিতিতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ জাহাজ থেকে শুরুতে পাঁচজনের দেহ এবং পরে তিনজনকে উদ্ধার করে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘জুয়েল নামে একজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা ও শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। উদ্ধার আরও দু’জন সজিবুল ও মাজেদুলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমানের বক্তব্য, ‘জাহাজে ডাকাতি করতে বাধা দেওয়ায় তাদের হত্যা করা হয়েছে। তবে ঘটনাটির তদন্ত চলছে।’