গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীরামপুর স্টেশন থেকে হকারদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল রেল। তারপরেই কলকাতা হাইকোর্ট রেলকে সবুজ সংকেত দেয়। হাইকোর্টের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেতেই শ্রীরামপুর স্টেশনে রাতভর উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে শতাধিক দোকান গুঁড়িয়ে দিল রেল। সবমিলিয়ে ১০৪টি অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে রুটিরুজি হারিয়েছেন শতাধিক হকার। প্রতিবাদে শনিবার দিনভর বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন হকাররা। পথে নামে তৃণমূল কংগ্রেসও। যদিও শতাধিক আরপিএফ কর্মী স্টেশনে পৌঁছeনোয় পিছু হটতে বাধ্য হন প্রতিবাদীরা। তারপরেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় অবৈধ নির্মাণ।
আরও পড়ুন: অমৃত ভারতে সাজছে শিয়ালদা, যাত্রীদের অসুবিধা দূর করতে সরানো হল বহু অবৈধ দোকান
জানা গিয়েছে, শনিবার রাত বারোটার পর থেকে স্টেশন চত্বর থেকে হাকারদের দোকান উচ্ছেদের কাজ শুরু করে রেল। এর জন্য শতাধিক রেল কর্মী মোতায়েন করা হয়। তাঁরা একে একে রেল স্টেশনে থাকা সব দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। হকারদের অনেকেই রয়েছেন যাঁরা ৪০-৫০ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। স্বাভাবিকভাবে আয়ের একমাত্র উৎস হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। এদিন হকার উচ্ছেদকে ঘিরে সকাল থেকে চলছিল প্রতিবাদ বিক্ষোভ। তাঁদের হটাতে প্রচুর সংখ্যক আরপিএফ মোতায়েন করা হয়। উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত হকাররা দোকান থেকে মালপত্র বের করে নিয়ে যান।
আয়ের উৎস হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বহু হকার। যার মধ্যে চা বিক্রেতা থেকে শুরু করে জুতো, কাপড় এবং মাছ বিক্রেতা রয়েছেন। এখন তারা কী করবেন কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। জানা গিয়েছে, উচ্ছেদের প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে মিটিং মিছিল করছিল তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন। এ বিষয়ে তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, রেলের পদক্ষেপের কারণে এতগুলি পরিবার পথে বসে গেল। যদি আলোচনা করে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হত, তাহলে তাঁদের পথে বসতে হত না। এখন তাঁরা কী করবেন কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না।
যদিও রেলের দাবি, বহু বছর ধরে স্টেশনের উপরে, নিচে এবং লাইনের পাশে অনেক দোকানপাট গজিয়ে উঠেছিল। উন্নয়নের কাজ চলছে। তাই হকার সরানো হয়েছে। উল্লেখ্য, রেলের নোটিশ পাওয়ার পর হকাররা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তবে রায় যায় হকারদের বিপক্ষে। তারপরেই দেরি না করে পদক্ষেপ করে রেল।