কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে কাপুরুষোচিত জঙ্গি হামলর তীব্র নিন্দা করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট। এই হামলাকে ঘৃণ্য বলে তোপ দাগলেন ট্রাস্টের সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, পহেলগাঁওয়ের নির্মম হত্যালীলা পাথেয় করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। সমাজে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে।
এই বিষয়ে সরাসরি বিজেপি এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কাঠগড়ায় তোলেন রাজীব। বলেন, 'ভারতীয় জনতা পার্টি ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ইচ্ছাকৃতভাবে একটি ধর্মীয় উসকানি ও উন্মাদনা তৈরি করে ধর্মীয় বিভাজন করতে চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গ সনাতন রাজ্য ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট এর তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছে।'
প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ এপ্রিল - অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করা হবে। ওই দিনই রীতি মেনে মন্দিরের বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সেই সংক্রান্ত তোড়জোড় প্রায় সারা হয়ে গিয়েছে। চলছে একেবরে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি।
এই প্রেক্ষাপটে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সভাপতি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দিঘায় মন্দির উদ্বোধনের পর, পরবর্তীতে কলকাতায় পুরোহিতদের নিয়ে একটি মহাসম্মেলন করবে তাঁদের ট্রাস্ট। সেই মহাসম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন রাজীব। ইতিমধ্যেই ট্রাস্টের পক্ষ থেকে মন্দির উদ্বোধন নিয়ে প্রচার শুরু করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এমন একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যাতে - আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার করা যায় এবং রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে সেই সম্প্রচার পৌঁছে দেওয়া যায়।
এই সরাসরি সম্প্রচারে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টেরও অবদান থাকছে। বেশ কিছু এলাকায় এলইডি টেলিভিশন বসানোর বন্দোবস্ত করছে তারা। একইসঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের আবেদন, ওই অনুষ্ঠানের দিন হিন্দুরা টিভির পর্দায় চোখ রেখেই দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে পারেন। পাশাপাশি, অনুষ্ঠানের সময় হিন্দুদের বাড়িতে মঙ্গলশাঁখ বাজানোর এবং বাড়ির ছাদে বাসন্তী রঙের নিশান বা পতাকা ওড়ানোরও আবেদন করেছেন তিনি।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় ঠিক একইভাবে অত্যন্ত উন্মাদনার সঙ্গে রাম মন্দিরের উদ্বোধন করা হয়েছিল। যে আয়োজনের প্রধান মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এই ২০২৫ সালে দিঘায় যে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হতে চলেছে, তার মুখ মূলত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বাংলাতেও বছর ঘুরলেই বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।