দলেরই বিধায়ককে নাম না করে ‘ওর চোদ্দ গুষ্টি চোর’ বলে আক্রমণ করলেন উপহারের বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বুধবার নদিয়ার পলাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বর্নিয়া অঞ্চলে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। বলে রাখি ওই কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের মানিক ভট্টচার্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিও ছিলেন। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিকে সপরিবারে জেলবন্দি ছিলেন মানিকবাবু। আরও পড়ুন - চাকরি বিক্রির ১৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, চার্জশিটে জানাল CBI
পড়তে থাকুন - চাকরি বিক্রি করে আরও ১০০ কোটি তুলতে চেয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ, অভিষেকের ভাগে ২০ কোটি
বুধবার মহুয়া বলেন, ‘যার জন্য দল কালিমালিপ্ত হয়েছে, যার জন্য সরকার প্রায় পড়ে গিয়েছে, আজ অবধি কেস চলছে, এফআইআর হয়েছে, চার্জশিট হয়ে গিয়েছে, তারা ভোটের আগে এলাকায় ঢুকবে, মিটিং করবে! আমাদের তা-ই মেনে নিতে হবে? আমরা কি মরে গিয়েছি? কী মনে হয় আপনাদের? আমি এগুলো বলি না, কোনও দিন বলি না। আজ বাধ্য হয়ে বলছি। যারা দলকে কালিমালিপ্ত করেছে, এরা ডাকাত, রঘু ডাকাত। এরা ছিঁচকে চোর নয়, পকেটমার নয়, ওর বৌ চোর, ছেলে চোর, চোদ্দোগুষ্টি চোর।’’ কর্মীদের উদ্দেশে আবার প্রশ্ন ছুড়ে মহুয়া বলেন, ‘‘আমি কি বার্নিয়ার বুকে স্টেজে দাঁড়িয়ে মিটিং করে মিথ্যা কথা বলতে এসেছি? বাস্তব কথাই বলছি। এই দলের আমি সৈনিক। মমতা ব্যানার্জির সৈনিক। এই দুটো-তিনটে চোর-ডাকাতের জন্য আমাদের সকলকে কালিমালিপ্ত হচ্ছে।’ এই ঘটনায় মানিক ভট্টাচার্য কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। প্রতিক্রিয়া দেননি নদিয়ার কোনও তৃণমূল নেতা।
আরও পড়ুন - 'বিশ্বকর্মা পুজোর ছুটি বাতিল করে ইদের ছুটি ২ দিন দিলেন ফিরহাদ সোহরাবর্দি হাকিম'
বলে রাখি ২০২৩ সালের অক্টোবরে মহুয়ার বিরুদ্ধে উপহার ও টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ আনেন তাঁরই প্রাক্তন প্রেমিক আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। অভিযোগ ছিল, নির্মাণ সংস্থা হীরানন্দানি গোষ্ঠীর কাছ থেকে বিভিন্ন দামি উপহার ও অর্থের বিনিময়ে লোকসভায় আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন মহুয়া। এমনকী যে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে লোকসভায় প্রশ্ন উত্থাপন করতে হয় তার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড হীরানন্দানি গোষ্ঠীর কর্তা দর্শন হীরানন্দানিকে দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তিনি দুবাইয়ে বসে ভারতের সংসদের পোর্টালে সেই প্রশ্নগুলি পোস্ট করতেন। যা উত্থাপিত হত লোকসভায়। এই তথ্যগুলির সঙ্গে হীরানন্দানি গোষ্ঠীর বাণিজ্যিক মুনাফার সম্পর্ক ছিল। অভিযোগ যে মিথ্যা নয় তা দিন কয়েকের মধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন দর্শন হীরানন্দানি। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে সংসদের কমিটি। একই সঙ্গে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।